সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স (Sonali Life Insurance), ইন্সুরেন্স সংক্রান্ত কর্মকান্ডের সাথে জড়িত এমন ব্যক্তিবর্গ খুব কমই রয়েছে যারা এই নামটি শুনেনি। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ইন্সুরেন্স জগতে বেশ জনপ্রিয় এবং নির্ভরতার নাম সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স। আমাদের এবারের আর্টিকেলে থাকছে সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য। এখান থেকে আপনি জানতে পারবেন সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কেমন? সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স এর সুবিধা এবং অসুবিধা সমূহ, জানতে পারবেন তাদের ডিপিএস এবং সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শাখা সমূহ সম্পর্কে।
আমরা দেখেছি বেশিরভাগ ইন্সুরেন্স কোম্পানির ক্ষেত্রেই প্রতারণা করার খবর শোনা যায়, এক্ষেত্রে সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স এর প্রতারণা স্টোরি আছে কিনা সেটাও জানাবো এবারের আর্টিকেলে। তাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর এই আর্টিকেলটির উপর আপনার দৃষ্টিপাত আমাদের একান্তই কাম্য। তাহলে চলুন প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক – সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স সম্পর্কে বেসিক কিছু তথ্য।
সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স (শুরু থেকে বর্তমান)
আমরা এবার যে ইন্সুরেন্স কোম্পানিটি নিয়ে আলোচনা করছি সেটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৩ সালে। তবে এর ভিত্তি গঠিত হয়েছিল প্রায় ৩০ বছর আগে, এমনটাই দাবি করছে সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি। আমরা যদি কোম্পানিটির লক্ষ্যের উপর দৃষ্টিপাত করি, সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোং লিমিটেড এর লক্ষ্য হলো: আর্থিক সুরক্ষা এবং অবসর গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় আয়ের সমাধান, বিনিয়োগ এবং সুরক্ষা প্রদান।
বর্তমান সময়ে এই কোম্পানিটির অসংখ্য শাখা প্রশাখা রয়েছে, এবং মূল শাখা অবস্থিত ঢাকায়। শুরুর দিকে তাদের আকার ছোট হলেও বর্তমানে একটি বৃহৎ আকার ধারণ করেছে। বর্তমান সময়ে সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স হাজার হাজার মিলিয়ন টাকা পরিশোধ সহ মূলধন নিয়ে সারাদেশে শাখা প্রশাখার মাধ্যমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে বর্তমান অনেক লাইফ ইন্সুরেন্স রয়েছে তবে সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কেমন? আপনি একটি লাইফ ইন্সুরেন্স তখনই গ্রহণ করবেন যখন সে ইন্সুরেন্স কোম্পানির পলিসি আপনার পছন্দ হবে, আসুন তবে দেখে নেওয়া যাক সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির বেছে নেয়ার কিছু সুবিধা সমূহ।
সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স এর সুবিধা
সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের আলোকে তারা নিম্ম লিখিত বিষয়ে গ্রাহকদের নিশ্চয়তার সাথে নিজেদের কোম্পানিতে বিভিন্ন ক্যাটাগরির বীমা করার জন্য বলে থাকে।
নিরাপদ এবং স্থিতিশীলতা
সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে আপনার বিনিয়োগ সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কোম্পানিটি ওয়েব ভিত্তিক প্রিমিয়াম পেমেন্ট এবং রসিদ সংগ্রহের সুবিধা শুরু করেছে। পলিসিধারীরা তার পলিসি সম্পর্কে তথ্য পেতে পারেন এবং সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করে প্রিমিয়াম পরিশোধ করতে পারেন। পলিসি হোল্ডাররাও ইমেল, নিশ্চিতকরণ বার্তা পেতে পারেন এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রসিদ ডাউনলোড করতে পারেন।
দ্রুততম প্রক্রিয়াকরণ
সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশের একমাত্র কোম্পানি যা দ্রুততম পলিসি সংক্রান্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। উদাহরণস্বরূপ, পলিসি ধারক প্রিমিয়াম পেমেন্ট করার সাথে সাথে নিশ্চিতকরণ বার্তা এবং ইমেল পান।
প্রথম প্রিমিয়াম রসিদ (FPR) এবং পলিসি দলিল সম্পন্ন হয় এবং পলিসি ধারক জীবন পলিসি নেওয়ার সাত দিনের মধ্যে প্রস্তুত হয়। মৃত্যু দাবি এবং অন্যান্য সম্পূরক যেমন WP, PDAB, CIC, EPA, এবং ADB সহ দাবি প্রক্রিয়া সাত দিনের মধ্যে সম্পন্ন হয়। এমনকি পলিসি হোল্ডাররা সার্ভাইভাল বেনিফিট (এসবি) সম্পর্কে এসএমএস বিজ্ঞপ্তি পান। পলিসি হোল্ডাররাও অনুমোদিত দাবি চেক সম্পর্কে অফিসিয়াল চিঠি পান।
সহজ উদ্ধৃতি এবং অনলাইন উপস্থিতি
আপনি এক ক্লিকেই সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বেশিরভাগ সেবা পেতে পারেন। ব্যবসার গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলি পরিচালনা এবং সংহত করার পাশাপাশি তাদের মূল্যবান নীতিধারকদের পরিসেবা প্রদানের জন্য তাদের কাছে বিশ্বমানের ERP (এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং) সফ্টওয়্যার রয়েছে।
গ্রাহক সেবা
সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স এর বিশেষজ্ঞদের একটি দল আছে যারা টেলিফোনের মাধ্যমে পলিসি হোল্ডারদের সাথে সরাসরি সংযোগ করে দক্ষ সেবা প্রদান করে। পলিসি ধারক প্রিমিয়াম পেমেন্ট এবং অন্যান্য পলিসি সম্পর্কিত পরিসেবার বিষয়ে তার প্রশ্নগুলি নিশ্চিত করতে পলিসি পরিষেবা বিভাগে সরাসরি কল করতে পারেন।
এতো গেলো কেবল সুবিধার কথা, “তাহলে কি সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স এর অসুবিধা নেই?” কিছু অসুবিধা তো অবশ্যই থাকবে। চলুন কিছু অসুবিধার কথা জেনে নেওয়া যাক।
সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স এর অসুবিধা
ইন্সুরেন্স কোম্পানি বলতেই কিছু সমস্যা তো থাকেই। সেরকম কিছু অসুবিধা হলোঃ
পর্যাপ্ত শাখা না থাকাঃ উইকিপিডিয়া মতে বর্তমানে বর্তমানে বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের অন্তর্গত ৬৪টি জেলায় মোট ৪৯৫ টি উপজেলা রয়েছে। কিন্তু এই আর্টিকেলটি লেখার সময় পর্যন্ত সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্সের ব্র্যাঞ্চ অফিস রয়েছে মাত্র ১৯০ টি। অর্থাৎ আপনি প্রত্যেক উপজেলায় তাদের ব্র্যাঞ্চ পাবেন না।
দাবি প্রক্রিয়া করার সময়ঃ সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্সের দাবি প্রক্রিয়া করার সময় কিছুটা বেশি সময় লাগতে পারে। এটি বিশেষ করে জটিল দাবির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এই পর্যায়ে আমরা সোনালী ব্যাংক লাইফ ইন্সুরেন্স পলিসি ডিটেলস তুলে ধরেছি যা দেখলে আপনার কাছে বিষয়টি ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
আরো পড়ুনঃ বিভিন্ন প্রকার বীমা তথ্য, সুযোগ-সুবিধা
সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স পলিসি ডিটেলস
এই পর্যায়ে জানানো হবে সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে থাকা বিভিন্ন ইন্সুরেন্স পরিকল্পনা সম্পর্কে। নিম্মে প্রতিটি পরিকল্পনার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করছি।
ইন্সুরেন্স পেনশন পরিকল্পনা অবসরকালীন সুরক্ষা
সবাইকেই আসলে অবসরকালীন জীবনে পা রাখতে হবে। একটা সময় আসবে যখন নিজের অর্থ উপার্জনের সক্ষমতা এখনকার মত থাকবে না। সেই সময়ে জীবন যাপন করার জন্য প্রয়োজন এমন কিছু অর্থ যেগুলোর ওপর ভিত্তি করে নিজেদের সকল চাহিদা পূরণ করা যায়।
এমন অনেক কর্মজীবী রয়েছে যারা অবসরকালীন সময়ে পেনশনের টাকার উপরে নির্ভর করে থাকে। এটি অবশ্যই প্রয়োজন। তবে কেবলমাত্র পেনশনের টাকা দিয়েই জীবন যাপন করা সম্ভব হয়ে উঠে না। যার বিকল্প হিসেবে রয়েছে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ইন্সুরেন্স পেনশন পরিকল্পনা।
উক্ত বীমা গ্রহণের জন্য আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ৫৫ থেকে ৬০ বছর। কোন প্রকার সাপ্লেমেন্টারি কভার এর প্রয়োজন নেই। কেবলমাত্র মেয়াদ পর্যন্ত পলিসি চালু থাকা সাপেক্ষে অবসরকালীন সময় হতে নিশ্চিন্ত ১০ বছর পর্যন্ত ভাতা পাবেন আবেদনকারী। এ সময়ের ভিতরে আবেদনকারী মারা গেলে নমিনী সেই টাকা পাবেন। আর আবেদনকারী যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন ভাতা পেতে থাকবেন।
এক্ষেত্রে আবেদনকারী যদি বীমার মেয়াদ চলাকালীন সময়ে মৃত্যু ঘটে তবে মনোনীতকে ভাতা এর দশগুণ প্রদান করা হবে। তাছাড়া আবেদনকারী অবসরকালীন সময়ে অথবা ভাতা প্রাপ্তির অবস্থায় গ্রাহক মৃত্যুবরণ করলে মৃত্যুর তারিখ থেকে অবশিষ্ট 10 বছরে সমপরিমাণ টাকা নমিনিকে এককালীন প্রদান করা হবে।
এই প্যাকেজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
মাসিক সঞ্চয়ী ক্ষুদ্র বীমা পরিকল্প
আমাদের মধ্যে অনেক মানুষ আছে যারা প্রতিমাসে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কিছু অর্থ একত্রিত করে সঞ্চয় করার মাধ্যমে একটা সময় পর সেটি থেকে ভালো কিছু করতে চান। ঠিক এমনই এক পরিকল্পনার সহিত সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কতৃক মাসিক সঞ্চয় ক্ষুদ্র বীমা প্রকল্প গঠন করা হয়েছে।
পলিসির মেয়াদ ১০ থেকে ১৫ বছর। যার অর্থ এই যে, প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট অর্থের প্রিমিয়াম প্রদানের মাধ্যমে ১০ থেকে ১৫ বছর পর লাভ সহ পুরো টাকাটি একত্রে হাতে পাবেন। এক্ষেত্রে কোন সাপ্লেমেন্টারি প্রযোজ্য নয়।
উক্ত পলিসিতে আরো উল্লেখ রয়েছে যে কেবলমাত্র মেয়াদ পর্যন্ত পলিসি চালু থাকা অবস্থায় গ্রাহক প্রযোজ্য বোনাসহ পূর্নবিমা অংক পলিসির শেষে গ্রহণ করবেন। তাছাড়া বিমা চলাকালীন সময়ে গ্রাহকের মৃত্যু ঘটলো গ্রাহকের মনোনীত ব্যক্তি পলিসির ধারার মধ্যে গ্রাহকের মৃত্যুর পরে তার মৃত্যুর তারিখ অব্দি অর্থসহ পূর্ণ বীমা পাবেন। তাছাড়া এক্ষেত্রে বিশেষ কোনো সুবিধা প্রদান করা হবে না।
মানি ব্যাক টার্ম বীমা পরিকল্প
আপনার কাছে কিছু অর্থ রয়েছে যেটা কোথাও বিনিয়োগ করতে চাচ্ছেন অথবা সেভিংস রাখতে চাচ্ছেন। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেহেতু ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে তাই ঝুঁকির মধ্যে না গিয়ে নিরাপদ সঞ্চয় স্কিম তৈরি করতে চান যেখানে ভালো পরিমাণে লভ্যাংশ পাওয়া যাবে। ঠিক এমনই এক ধরনের প্রকল্প তৈরী করে রেখেছে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।
মানি ব্যাক টার্ম নামক পলিসিতে প্রদানকৃত অর্থের ওপরে নিশ্চিতভাবে ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ পাবেন। উক্ত পলিসির মেয়াদ ১০ বছর, ১৫ বছর এবং ২০ বছর। কোন ধরনের সাপ্লিমেন্টারি কভার প্রযোজ্য নয়। কেবলমাত্র মেয়াদ শেষ হওয়া সাপেক্ষে গ্রাহক নিশ্চিতভাবে ২৫% লাভ সহ পূর্ণ বীমা মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পেয়ে থাকবেন।
তাছাড়া বীমার মেয়াদ চলাকালীন সময়ে যদি গ্রাহকের মৃত্যু ঘটে তবে গ্রাহক কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তির নিকট সম্পূর্ণ অর্থ প্রদানের নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। তাছাড়া বিশেষ কোনো সুবিধা থাকছে না উক্ত পলিসির আন্ডারে।
সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স ডিপিএস (মাসিক সঞ্চয়ী বীমা পরিকল্প -DPS)
আপনার কষ্টার্জিত অর্থ বাড়ানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই সেরা উপায়গুলির সন্ধান করতে হবে! হ্যাঁ! আপনার জন্য একটি আদর্শ আর্থিক পরিকল্পনা হতে পারে যেটি যুক্তিসঙ্গত আয়ের সাথে আপনার অর্থ জমা করে এবং সেই সাথে আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে।
আপনি যদি ঠিক এমনই একটি পরিকল্পনা খুঁজে থাকেন তবে সোনালী লাইফের মাসিক সঞ্চয় পরিকল্পনা আপনার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে। সোনালী লাইফের মাসিক সঞ্চয় পরিকল্পনা যেমন আপনাকে সঞ্চয়ের সুযোগ দেয়, তেমনি এটি আপনাকে এবং আপনার পরিবারকেও রক্ষা করে। এই বিষয়ে একজন গ্রাহক যে সকল সুবিধা গুলো পাবে সেগুলো নিম্নরূপ:
- পলিসি ধারক জমাকৃত প্রিমিয়ামে ৬ – ১০% হারে মুনাফা পাবেন (শর্ত সাপেক্ষে)
- পলিসির মেয়াদ হবে সর্বনিম্ন ৫ বছর এবং সর্বোচ্চ ১০ বছর।
- বয়স ১৮ থেকে ৫৫ বছর হবে।
- পরিপক্কতার বয়স ৬৫ বছর হবে।
- প্রিমিয়াম পেমেন্ট মাসিক হারে প্রদান করতে হবে।
- সর্বনিম্ন বীমাকৃত অর্থ ৬০০০০ এবং সর্বোচ্চ ১০০,০০,০০০টাকা।
- বিমাকৃত অর্থ = বার্ষিক প্রিমিয়াম X পলিসি মেয়াদ ,
- গার্হস্থ্য কর আইন অনুযায়ী আয়কর মওকুফ প্রযোজ্য হবে।
তাছাড়া মেয়াদপূর্তির সুবিধা গুলো হলো: ১) পলিসি ধারক পলিসি কার্যকর হওয়া সাপেক্ষে মেয়াদপূর্তির তারিখে অর্জিত বোনাস সহ সম্পূর্ণ বিমাকৃত অর্থ পাবেন। ২). ন্যূনতম দুই বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য প্রিমিয়াম জমা দেওয়ার পরে, এমনকি যদি প্রিমিয়াম জমা বন্ধ করা হয়, তাহলে পরিশোধিত মূল্য ম্যাচিউরিটির উপর দেওয়া হবে।
বীমাকারীর মৃত্যু হলে, পলিসি সচল থাকা সাপেক্ষে বিমাকৃত ব্যক্তির মৃত্যুর তারিখে নমিনি অর্জিত বোনাস সহ সম্পূর্ণ বিমাকৃত অর্থ নমিনি পাবেন। তাছাড়া ন্যূনতম 2 (দুই) বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য প্রিমিয়াম জমা দেওয়ার পরে, প্রিমিয়াম জমা বন্ধ করা হলেও, বিমাকৃত ব্যক্তির মৃত্যুতে মনোনীত ব্যক্তিকে পরিশোধিত মূল্য প্রদান করা হবে।
সিঙ্গেল প্রিমিয়াম বীমা পরিকল্প
এককালীন প্রিমিয়াম প্রদানের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর পর্যাপ্ত লাভ সহ অর্থাৎ পাওয়ার উদ্দেশ্যে যে বীমা প্রকল্প গ্রহণ করা হয় সেটিকে সিঙ্গেল প্রিমিয়াম বীমা প্রকল্প বলে। যা প্রদান করছে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।
উক্ত পলিসিটি মেয়াদ ৬, ৮, ১০, ১২, ১৫ বছর। পলিসি ধারক পলিসির মেয়াদপূর্তিতে মূল বীমার দ্বিগুণ পাবেন। পলিসির মেয়াদের সময় নিশ্চিতকৃত ব্যক্তির মৃত্যুর ক্ষেত্রে পলিসি ধারকের মনোনীত ব্যক্তি পলিসির মেয়াদপূর্তির আগে পলিসিধারীর মৃত্যুতে মূল বীমার দ্বিগুণ পাবেন।তাছাড়া এই পলিসিটিতে বিশেষ কোনো সুবিধা থাকছে না।
প্রত্যাশিত সঞ্চয়ী বীমা পরিকল্প
সর্বমোট তিনটি কিস্তিতে পরিশোধ করা হয় এই বীমাটি। পলিসির সম্পূর্ণ মেয়াদ বিভিন্ন ভাবে নির্ধারণ করা যেতে পারে ১২, ১৫, ১৮, ২১ এবং ২৪ বছরের আলোকে। শুধুমাত্র যদি পলিসি স্ট্যাটাসটি মেয়াদপূর্তির সময় পর্যন্ত সক্রিয় থাকে, পলিসি ধারক মেয়াদের শেষে মেয়াদপূর্তিতে অর্জিত বোনাসের সাথে সম্পূর্ণ বিমাকৃত অর্থ পাবেন।
এক্ষেত্রে বীমার মোট পরিমাণের ২৫% শুরুর এক তৃতীয়াংশ মেয়াদের মধ্যে পেয়ে যাবেন। পরবর্তীতে দুই তৃতীয়াংশ মেয়াদ পূর্তিতে আরো ২৫% অংকের বীমা পাবেন। এবং সবশেষে বাকি ৫০% এর সাথে অর্জিত লাভ একেবারে সম্পূর্ণ মেয়াদপূর্তিতে পেয়ে যাবেন।
পলিসির মেয়াদের সময় নিশ্চিতকৃত ব্যক্তির মৃত্যুর ক্ষেত্রে শুধুমাত্র পলিসি স্ট্যাটাস সক্রিয় থাকলে, পলিসিধারীর মনোনীত ব্যক্তি পলিসির মেয়াদের মধ্যে পলিসিধারীর মৃত্যুতে তার/তার তারিখ পর্যন্ত অর্জিত বোনাস সহ সম্পূর্ণ বীমা প্রাপ্ত হবে। তাছাড়া সাপ্লিমেন্টারি কভার হিসেবে থাকছে DIAB, PDAB তবে অতিরিক্ত কোনো সুবিধা প্রদান করা হবে না।
শিশু নিরাপত্তা বীমা পরিকল্প
আপনার শিশুর নিরাপত্তার সুবাধে দীর্ঘকালীন সময়ের জন্য বীমা প্রকল্প গ্রহন করতে চাইলে সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির শিশু সুরক্ষা স্ক্রিমটি গ্রহন করতে পারেন। পলিসিটিতে রয়েছে ১০ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত মেয়াদ, আপনি আপনার প্রয়োজন মত সেট করে নিতে পারবেন আপনার বীমাটি।
মেয়াদ সম্পন্ন হওয়া সাপেক্ষে আবেদনকারী ও শিশু উভয়ে জীবিত থাকলে প্রিমিয়ামের পুরো অর্থ সহ বোনাস গুলো পেয়ে যাবেন। তবে বীমার মেয়াদের মধ্যেই যদি গ্রাহকের মৃত্যু ঘটে তবে বৃত্তি প্রদান করা হবে না এবং মেয়াদের শেষে শিশুর আইনগত অভিবাবককে বোনাস সহ পূর্ণ বীমা পরিশোধ করা হবে।
বিশেষ সুবিধা হিসেবে থাকছে – যদি প্রিমিয়াম দাতার মৃত্যু ঘটে তবে প্রিমিয়ামটি মওকুফ হবে এবং পলিসিটি চালু থাকবে। এক্ষেত্রে গ্রাহক নিম্মে উল্লেখিত সুবিধা সমূহ পাবেন।
১) প্রিমিয়াম দাতার মৃত্যুতে, মৃত্যুর দিন থেকে শুরু করে প্রতি মাসে বীমাকৃত অর্থের ১% হারে মাসিক ভাতা পাবে শিশু।
২) পলিসির মেয়াদ শেষ হলে শিশুকে পূর্ণ অর্থ ও বোনাস প্রদান করা হবে। অন্যদিকে যদি শিশুর মৃত্যু ঘটে তবে উক্ত অর্থ পলিসি অনুযায়ী তার অবিভাবককে দেয়া হবে।
এক্ষেত্রে বীমার মেয়াদ ৬ মাসের কম হয়ে থাকলে বীমাকৃত অর্থের ২৫% দেয়া হবে এবং ৬ মাসের বেশি অন্যদিকে ১২ মাসের কম হলে ৫০% প্রদান করা হবে। একই ভাবে ১২ মাস থেকে ২৪ মাসের মত মেয়াদ হলে ৭৫% সব শেষে ২৪ মাসের বেশি দিন যাবত মেয়াদ হলে সম্পুর্ণ অর্থ প্রদান করা হবে।
অন্যান্য বীমা পরিকল্প গুলো
উপরে উল্লেখিত বীমা পরিকল্প গুলো বাদেও সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির রয়েছে আরো বেশ কিছু বীমা পলিসি। এগুলোর প্রতিটিই নিজস্ব প্রয়োজনের ভেদে গ্রাহক গ্রহন করে থাকে। বিশেষ করে স্পেসিফিক কোনো ইভেন্টকে কেন্দ্র করে এসকল বীমা করানো হয়ে থাকে।
- কোটিপোটি স্কিম
- মিলিনিয়র স্কিম
- শিক্ষা সুরক্ষা পরিকল্প
- হজ্জ বীমা
- দেনমোহর বীমা
সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স শাখা সমূহ
আপনি এবার নিশ্চয়ই জানতে আগ্রহী হচ্ছেন সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স এর শাখা সমূহ কোথায় কোথায় রয়েছে? কিংবা আপনার আশেপাশের ঠিক কোথায় সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্সের শাখা রয়েছে? উত্তরা হলে এখানে ক্লিক করে আপনার এরিয়া ভিত্তিক সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স শাখা সমূহ দেখতে পারবেন।
পরিশেষে কিছু কথা
জীবন বীমা প্রতিটি মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপুর্ণ। কেননা, অনিশ্চিত জীবনে প্রতিটি মানুষই চায় তার পরিবারের সকলে যেনো সচ্ছল ভাবে জীবন কাটাতে পারে। আর এই কারনে মানুষের জীবনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করে কর্মের মধ্যে এবং স্বাচ্ছন্দ্যতার জন্য প্রয়োজন ভালো সঞ্চয় প্রয়োজন।
এদিকে সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স দীর্ঘ সময় ধরে বীমা সুবিধা প্রদান করে আসছে। বর্তমানে বাংলাদেশে যত গুলো বীমা কোম্পানি রয়েছে সেগুলোর মধ্যে সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স খুবই জনপ্রিয় ও সুনামধন্য। ওভারল ভাবে সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কেমন তা আমরা আর্টিকেলের বিভিন্ন ধাপেই তুলে ধরেছি।