সময়ের সাথে সাথে মানুষের ইচ্ছা পূরণের ক্ষেত্রে একটি আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে লোন পদ্ধতি। স্বপ্ন পূরণের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের জন্য এক বিশ্বস্ত প্রতীক হয়ে উঠা ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নেই আজকের আলোচনায়।
আজ থেকে কিছুকাল আগে, যেখানে মানুষের নিত্যনৈমিত্তিক অভাব পূরণের ক্ষমতা ছিল না সেখানে স্বপ্ন পূরণের কথা কল্পনা করা খুব দুঃসাহসিক ছিল। অভাব এবং স্বপ্ন দুটোই সমান-তালে পাল্লা দিত মানুষের জীবনে। চাইলেও সব সুবিধা পাওয়া তখন সম্ভব ছিল না। যেখানে অভাব ছিল অসীম সেখানে স্বপ্ন পূরণের পদক্ষেপ নেওয়া মানুষের কাছে প্রায় দুঃসাহসিক ব্যাপার ছিল। সামান্য থাকার জমি এবং আবাদী জমি নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করার মধ্যে সীমিত ছিল মানুষের জীবন।
ঠিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য তখন ধার নেওয়ার একমাত্র মাধ্যম ছিল গ্রাম্য মাতব্বরদের থেকে নেওয়া ঋণ। কিন্তু ক্ষুদ্র ঋণ নিতে তাদের যেমন কাঠঘর পোহাতে হতো ঠিক তেমনি করে ঋণ পরিশোধ করতে দেরি হলে নিজের ভিটে মাটি এবং জমি-জামা হারাতে হতো। তাই মানুষের স্বপ্ন অনেকটা অধরাই রয়ে যেত। বহুকাল ধরে মানুষের এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বপ্নগুলোকে পূরণের লক্ষ্যে একধাপ এগিয়ে চলার উপায়ের নাম হল ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পদ্ধতি।
প্রত্যাহিক জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে যেখানে যুদ্ধ করতে হতো ,সেক্ষেত্রে স্বপ্ন পূরণ ছিল তার কাছে অনেক কিছু। যেখানে মানুষের আয় ছিল সীমিত সেখানে মানুষের চাহিদা ছিল অসীম। মানুষের জীবনে আয় এবং অভাবের মধ্যে সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে বর্তমানে কাজ করছে দেশের প্রচলিত ব্যাংকিং খাতসমূহ। বর্তমানে স্বপ্নপূরনেই ক্ষেত্রে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ব্যাংকিং ব্যবস্থাসমূহ। ব্যাংকিং খাতে মানুষের অন্যতম এক আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে ইসলামী ব্যাংক।
ইসলামী ব্যাংকঃ
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক খাত উন্নয়নের লক্ষ্যের প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে কাজ করে যাচ্ছে ইসলামী ব্যাংক। গ্রাহকদের স্বপ্ন পূরণে এবং দেশকে ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক খাত সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানটি। সম্পূর্ণ শরীয়াহ মোতাবেক পরিচালিত এই ব্যাংকটি ইসলামের বিধিবিধান অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে থাকে। সম্পূর্ণ সুদ-বিহীন লেনদেন করার ক্ষেত্রে একই সাথে আধিপত্য বিস্তার করছে এই ব্যাংক।
ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পদ্ধতি
মানুষের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা প্রদানের ক্ষেত্রে বহুকাল আগে ধরে প্রচলিত ঋণ প্রথার সংস্করণ রূপ হল ব্যাংক লোন পদ্ধতি। মানুষের জীবনে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা প্রণয়নের ক্ষেত্রে এবং তাদের স্বপ্ন পূরণের ক্ষেত্রে এক আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে ব্যাংকিং লোন ব্যবস্থা। গ্রাহকদের-স্বপ্ন পূরণের ক্ষেত্রে এবং দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নয়নে ইসলামী ব্যাংক শুরু থেকে কাজ করে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইসলামী ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের জন্য নানান ধরণের ঋণ সুবিধা দিচ্ছে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে।
ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার যোগ্যতা
সম্পূর্ণ শরিয়াহ মোতাবেক প্রচলিত এই ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক লোন সুবিধা গ্রহণ করতে চান তাহলে আপনার সেক্ষেত্রে কিছু বিশেষ যোগ্যতা থাকতে হবে। চলুন তাহলে জেনে নেই লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্যতা সমূহ-
- যে ব্যক্তি ইসলামী ব্যাংকে লোন সুবিধা নিতে চায় সে ব্যক্তির বয়স অবশ্যই ১৮ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে হতে হবে।
- লোনের জন্য আবেদনকারীর ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট থাকতে হবে।
- লোনের আবেদন এর জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট যেমন জাতীয় পরিচয়পত্র ,ছবি ,শিক্ষার সনদ ,সম্পত্তির কাগজ ,চাকরির কিংবা ব্যবসার সনদ সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে রাখতে হবে।
- যে লোনের জন্য আবেদন করবেন সকল তথ্যের সত্যায়িত কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
ইসলামী ব্যাংকের লোনের নামসমূহ
চলুন জেনে নেওয়া যাক গ্রাহকদের কল্যাণের স্বার্থে কি কি ধরণের লোন সুবিধা দিয়ে থাকে ইসলামী ব্যাংক এবং সেই সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণসমূহ –
- হোম লোন।
- বাণিজ্য লোন।
- উদ্যোক্তা লোন।
- কৃষি লোন।
- ফ্রিল্যান্সিং লোন।
- রিয়েল স্টেট লোন।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আপনি এই সকল লোন পেতে পারেন এবং এছাড়াও এই লোন সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ সমূহ।
আরো পড়ুনঃ ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য
১। হোম লোন
একটি বাড়ি হল আপন ঠিকানা। যেখানে হবে তার প্রিয়জনদের বসবাস। তাই সকল মানুষের স্বপ্ন থাকে একটি বাড়ি করার। কিন্তু অর্থনৈতিক সচ্ছলতা না থাকার কারণে অনেকের সে স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে যায়। তাই আপনাদের একটি বাড়ির স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে আপনাদের সর্বাত্মক পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ইসলামী ব্যাংক। ইসলামী ব্যাংক আপনার জায়গার উপর ভিত্তি করে আপনার বাড়ির জন্য প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার লোন সুবিধা প্রদান করে থাকে। এছাড়াও আপনি যদি আপনার পুরাতন বাড়িকে নতুন করার জন্য লোন সুবিধা নিতে চান সেক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকার ঋণ সুবিধা প্রদান করে থাকে।
তবে আপনি যদি হোম লোন সুবিধা নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই নিম্নোক্ত কিছু কাগজপত্র সাথে রাখতে হবে –
- এনওসি।
- জমির দলিল।
- জমির সিএস ,বিএস খতিয়ান।
- খতিয়ান নামধারী রশিদ।
উপরোক্ত কাগজপত্র লোনের জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে সাথে করে নিয়ে যেতে হবে।
২। বাণিজ্য লোন
একটি দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিতে হলে কাজ করে থাকে ব্যবসা খাত। তাই ব্যবসায়ের উন্নতি করে দেশকে সমৃদ্ধ করার খাতিরে লোন সুবিধা দিয়ে থাকে ইসলামী ব্যাংকের বাণিজ্য লোন। আপনি যদি ইসলামী ব্যাংকের বাণিজ্য লোন পেতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে কিছু জরুরি কাগজপত্র অবশ্যই সাথে রাখতে হবে-
- জাতীয় পরিচয়পত্র।
- বাণিজ্য লাইসেন্স /ট্রেড লাইসেন্স।
- ব্যবসায়ের কাগজপত্র /দোকানের কাগজপত্র /আয়ের দলিল।
৩। উদ্যোক্তা লোন
দেশের নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে এবং দেশকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংক দিয়ে থাকে উদ্যোক্তা লোন। ব্যবসা খাতকে প্রসার করা এবং নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরির স্বার্থে ইসলামী ব্যাংক নতুন উদ্যোক্তাদের লোন দিয়ে থাকে।
তবে আপনি যদি এই সুবিধা নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই নিম্নোক্ত প্রয়োজনীয় কাগজ সাথে রাখতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক উদ্যোক্তা লোন নিতে হলে ঠিক কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন –
- জাতীয় পরিচয়পত্র।
- ছবি।
- আয়ের উৎস।
- ট্রেড লাইসেন্স।
- ব্যবসায়ের হিসাব।
- পরিকল্পনা।
- সম্ভাব্য বাজেট।
৪। কৃষি লোন
বাংলাদেশ একটি কৃষি সমৃদ্ধশালী দেশ। দেশের কৃষির উন্নয়ন প্রসারে এবং কৃষিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করে যাচ্ছে ইসলামী ব্যাংক। কৃষি খাতে নতুন নতুন প্রযুক্তির সাথে কৃষকদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার স্বার্থে কাজ করছে ইসলামী ব্যাংক।
তবে আপনি যদি কৃষি লোনের জন্য আবেদন করতে চাইলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট সাথে করে নিতে হবে। সেগুলো হলোঃ
- জাতীয় পরিচয়পত্র।
- জমির দলিল।
- সম্ভাব্য পরিকল্পনা।
- আয়ের উৎস সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
আরো পড়ুনঃ যেকোন ব্যাংক থেকে খুব সহজে ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়
৫। ফ্রিল্যান্সিং লোন
বর্তমানে তথ্য এবং প্রযুক্তি খাতে এগিয়ে চলছে বিশ্ব। সেক্ষেত্রে পাল্লা দিয়েছে সমান-তালে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। বর্তমানে তরুণদের পছন্দের একটি পেশা হল ফ্রিল্যান্সিং। তাই ফ্রিল্যান্সিংয়ে নিজের উজ্জ্বল ক্যারিয়ার লক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংক তরুণ ফ্রিল্যান্সারদের জন্য দিচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং লোন। যেখানে তারা নিজেদের ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি ,নানান প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট কিনতে পারবে।
ফ্রিল্যান্সিং লোন নিতে হলে আপনার সাথে কিছু ডকুমেন্ট নিতে হবে-
- জাতীয় পরিচয়পত্র।
- ফ্রিল্যান্সিং সনদ।
- যে প্রতিষ্ঠান থেকে ট্রেনিং নিয়েছেন উক্ত প্রতিষ্ঠানের ডকুমেন্ট সহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজ।
৬। রিয়েল এস্টেট লোন
বর্তমানে রিয়েল এস্টেট খাতে বেশ এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সেই সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর সংখ্যা। আর আপনি যদি রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করে থাকেন সেই ক্ষেত্রে লোন দিবে ইসলামী ব্যাংক।
রিয়েল স্টেট্ লোন নিতে হলে আপনার যা যা প্রয়োজন হবে তা হল-
- জাতীয় পরিচয়পত্র।
- ঠিকাদার সনদ।
- জমি জমার দলিল।
- স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির দলিল।
- ব্যাংক ডকুমেন্ট।
উপরোক্ত কাগজপত্রের উপর আপনার লোন অনুমোদন অনেকাংশে নির্ভর করে।
উপসংহারঃ
লোন সুবিধার ফলে মানুষের জীবনে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা এসেছে। নিজেদের অপূর্ণ ইচ্ছে আজ মধ্যবিত্তরাও পূরণ করতে পারছে লোন সুবিধার ফলে।আশা করি আজকের আলোচনার মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। ভবিষ্যতে ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে তা আপনাকে বেশ সাহায্য করবে।
আমি লোন নিতে চাই
আপনার পার্শ্ববর্তী ইসলামি ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ করুন।
Ami loan nite chai
ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ করেন।
ইসলামী ব্যাংক থেকে কৃষি লোন নিতে হলে শুরুতে সর্বোচ্চ কৃষি লোন কত টাকা নেওয়া যাবে।গরু পালনের জন্য।
সঠিক তথ্যের জন্য আপনার পার্শ্ববর্তী ইসলামী ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ করুন।
I like to get Tk- 3500000/ home loan(For Flat) quickly. How can I proceed? I am a govt. Service holder(9th grade).
Contact to the bank